জগন্নাথপুরে তিন বছর ধরে বিকল এক্সরে মেশিন, ভোগান্তিতে রোগীরা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে মেশিন দীর্ঘ তিন বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে সাধারণ রোগীরা সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় এক্সরে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এবং বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে আশপাশের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সেবা নিচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০৫ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সরবরাহ করা এক্সরে মেশিনটি বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ সমস্যার কারণে তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ সময় বাক্সবন্দি থাকার পর ২০২১ সালে অবশেষে যন্ত্রটি চালু করা হয়। কিন্তু ২০২২ সালের শুরুর দিকে যন্ত্রটিতে ত্রুটি দেখা দিলে তা পুনরায় অচল হয়ে পড়ে। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত এটি মেরামত না হওয়ায় রোগীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা আলাল মিয়া নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, “আমার ছেলের হাতে আঘাত লাগে। ডাক্তার এক্সরে করাতে বলেন। কিন্তু হাসপাতালে এক্সরে মেশিন নষ্ট থাকায় বাইরে গিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে করাতে হয়েছে।” আরেক রোগী নাজমা বেগম বলেন, “বুকে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। শুনেছিলাম এখানে বিনামূল্যে এক্সরে হয়, কিন্তু এসে জানলাম মেশিন নষ্ট। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে টাকা খরচ করে এক্সরে করাতে হয়েছে।” হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. তামজিদ হোসাইন জানান, “এক্সরে মেশিনটির ব্যাটারি ও সফটওয়্যারে জটিলতা রয়েছে। ফলে এটি চালু করা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করছি, এ বছর মেশিনটি সচল হতে পারে।” জগন্নাথপুর উপজেলা নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক এমএ কাদির বলেন, “প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস এই উপজেলায়। অথচ সরকারি হাসপাতালে এক্সরে মেশিন বিকল। রোগীদের চিকিৎসা সেবা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে সেবা নিতে হচ্ছে।” এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কৃপেশ রঞ্জন রায় বলেন, “আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটির জটিলতা থাকায় এটি মেরামতে বিদেশি এক্সপার্ট প্রয়োজন। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।” স্থানীয়রা বলছেন, জনস্বাস্থ্য সেবার এই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক। দ্রুত এটি সচল করে সেবা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছেন তারা। জগন্নাথপুরে তিন বছর ধরে বিকল এক্সরে মেশিন, ভোগান্তিতে রোগীরা
আপনার মতামত লিখুন :